❏ প্রকাশকের আরয
নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা
মহান আল্লাহর জন্য যিনি এই বিশ্ব ভূবনের মালিক। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি, তাঁর নিকট সাহায্য
চাচ্ছি, তাঁরই নিকট ক্ষমা
প্রার্থনা করছি। আমাদের নাফ্সের অনিষ্টতা ও ‘আমলের খারাবী থেকে
বাঁচার জন্য আমরা তাঁর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আল্লাহ সুবহানাহু যাকে
হিদায়াত দান করেন তাকে কেহ গোমরাহ্ করতে পারেনা, আর যে গোমরাহ্ হয় তাকে কেহ হিদায়াত দিতে পারেনা। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর
কোন মা'বুদ নেই, তিনি এক ও
অদ্বিতীয়, পরাক্রমশালী এবং
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। তিনি তাঁকে
সত্যসহ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসাবে প্রেরণ করেছেন। দুরূদ ও সালাম সৃষ্টির
সর্বোত্তম সৃষ্টি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাথীদের প্রতি এবং কিয়ামাত পর্যন্ত যারা নিষ্ঠার সাথে তাঁর
অনুসরণ করবে তাদের প্রতি। যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে সে
হিদায়াতপ্রাপ্ত হবে এবং যে তাদের নাফরমানী করবে সে স্বীয় নাফসের ক্ষতি ছাড়া আর
কিছুই করবেনা এবং সে আল্লাহর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার প্রতি আমাদের অশেষ শুকরিয়া
যে, তিনি আমাদেরকে
কুরআনের একটি অমূল্য তাফসীর প্রকাশ করার গুরু দায়িত্ব পালনের তাওফীক দিয়েছেন।
১৯৮৪ সালে ড. মুহাম্মাদ
মুজীবুর রাহমান কর্তৃক অনুবাদকৃত তাফসীর ইবন কাসীর’ আমাদের হস্তগত হওয়ার পর আমরা তা ছাপানোর দায়িত্ব গ্রহণ করি। ঐ সময় জনাব
মুজীবুর রাহমান সাহেব আমাদের জানিয়েছিলেন যে, আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় আর ছাপানো যাচ্ছিলনা বলে তিনি প্রায় নিরাশ হয়ে
পড়েছিলেন। যা হোক, আল্লাহর অশেষ
দয়ায় তাঁর কালামের প্রচার যেহেতু হতেই থাকবে, তাই তিনি আমাদেরকে তাফসীর খন্ডগুলি নতুন করে ছাপানোর ব্যবস্থা করার সুযোগ
দিলেন। এ ব্যাপারে দেশী ও প্রবাসী বেশ কিছু ভাইবোনেরা এগিয়ে আসেন। যাদের কথা
উল্লেখ না করলেই নয় তারা হলেন, তাফসীর পবিলিকেশন
কমিটির মূল উদ্যোক্তা জনাব আবদুল ওয়াহেদ সাহেবের তৎকালীন ফাইসন্স’ এর ব্যবস্থাপনা
পরিচালক থাকা অবস্থায় ঐ সংস্থার কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মাসিক বেতন থেকে প্রদেয়
অনুদান। এ ছাড়াও আর যাদের কথা উল্লেখ না করলেই নয় তারা হলেন ‘তাফসীর মাজলিস’ এর বোনদের অকাতর
দান। যাদের কথা বলা হল তাদের অনেকেই আজ আর বেঁচে নেই। কিন্তু দানের টাকায় যে কাজ হাতে নেয়া হয়েছিল তা জারী রয়েছে। আল্লাহ
জাল্লা শানুহুর কাছে দু'আ করছি, তিনি যেন তাদের দান
ও পরিশ্রমের জাযা খাইর দান করেন এবং আখিরাতের হিসাব সহজ করে দেন। আমীন!!
বিশ্বের অন্যতম সেরা
তাফসীর বলে স্বীকৃত ‘তাফসীর ইবন কাসীর’ ছাপিয়ে সুপ্রিয়
পাঠকবর্গের কাছে পৌছে দিতে পেরে আনন্দ পাচ্ছিলাম ঠিকই, কিন্তু একটা
অতৃপ্তিও বার বার মনকে খোঁচা দিচ্ছিল। মনে একটি সুপ্ত বাসনা লালিত হচ্ছিল যে, আল্লাহ সুবহানাহু
সুযোগ দিলে তাফসীর খন্ডগুলিতে যে ইসরাঈলী রিওয়ায়াত এবং দুর্বল কিংবা যঈফ হাদীস
রয়েছে তা বাছাই করে বাদ দিয়ে নতুনভাবে পাঠকবর্গের কাছে পেশ করব। এ ব্যাপারে জনাব
আবদুল ওয়াহেদ সাহেব ও জনাব ইউসুফ ইয়াসীন সাহেব জনাব মুজীবুর রাহমান সাহেবকে বিগত
বছরগুলিতে তাগিদও দিয়েছেন। কিন্তু প্রবাসের ব্যস্ততা এবং নানা বাধার কারণে জনাব
মুজীবর রাহমান সাহেবের পক্ষে তা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। যা হোক, আল্লাহর অসীম
দয়ায় তাফসীর পাবলিকেশন কমিটির পক্ষ থেকে একটি সম্পাদনা পরিষদ গঠন করে সবার
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন আঙ্গিকে তাফসীর খন্ডগুলিকে পাঠকবর্গের হাতে তুলে দিতে
সক্ষম হচ্ছি। বাজারে যে তাফসীর খন্ডগুলি রয়েছে তা শেষ হওয়ার সাথে সাথে প্রতিটি
খন্ডের নতুর সংস্করণ বের করার চেষ্টা করব। ওয়ামা তাওফীকি ইল্লা বিল্লাহ।
প্রতিটি তাফসীর খন্ডে, বিষয়বস্তুর উপর
লক্ষ্য রেখে, আমরা তাফসীরের
বিভিন্ন শিরোনাম সংযোজন করেছি যাতে পাঠকবর্গের নির্দিষ্ট কোন বিষয়ের আলোচনা খুঁজে
পেতে সুবিধা হয়। এ ছাড়া বর্ণিত হাদীসের সূত্র নম্বরগুলিও সংযোজন করেছি। কুরআনের
কোন কোন শব্দ বাংলায় লিখা কিংবা উচ্চারণ সঠিক হয়না বলে ওর আরাবী শব্দটিও পাশে
লিখে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া পাঠককুলের কেহ যদি আমাদেরকে কোন সদুপদেশ দেন তাহলে তা
সাদরে গ্রহণ করব। মুদ্রণ জনিত কারণে কোন ত্রুটি থেকে থাকলে তাও আমাদের অবহিত করলে
পরবর্তীতে সংশোধনের চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
এ বিরাট কাজে যা কিছু ভুল
ত্রুটি হয়েছে তা সবই আমাদের, আর যা কিছু গ্রহণযোগ্য তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার পক্ষ থেকে। আমরা
মহান আল্লাহর সাহায্য চাই, তিনি যেন তাঁর
পবিত্র কালামের তাফসীর পাঠ করার মাধ্যমে আমাদের প্রতি হিদায়াত নসীব করেন এবং
উত্তম পুরস্কারে পুরস্কৃত করেন। আমীন! সুম্মা আমীন!!
তাফসীর পাবলিকেশন কমিটি
No comments:
Post a Comment