পরম করুনাময় ও দয়ালূ আল্লাহর নামে শুরু করছি।
১। বলুন, তিনি আল্লাহ, এক,
২। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
৩। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি
৪। এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
মুসনাদে আহমদে হযরত উবাই ইবনে কা’ব (رضي الله عنه)হতে
বর্ণিত আছে যে,
মুশরিকরা নবী করীম (ﷺ)কে বললোঃ “হে মুহাম্মদ (ﷺ)!
আমাদের সামনে তোমার প্রতিপালকের গুণাবলী বর্ণনা কর।” তখন আল্লাহ
তাআলা (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) এ সূরাটি শেষ পর্যন্ত অবতীর্ণ করেন।
(صَمَدُ)শব্দের অর্থ হলো যিনি সৃষ্ট হননি। এবং যাঁর সন্তান সন্তুতি নেই। কেননা, যে সৃষ্ট হয়েছে সে এক সময় মৃত্যুবরণ করবে এবং অন্যেরা তার উত্তরাধিকারী হবে। আর আল্লাহ তাআলা মৃত্যুবরণও করবেন না এবং তাঁর কোন উত্তরাধিকারীও হবে না। তিনি কারো সন্তান নন এবং তার সমতুল্য কেউই নেই।১
হযরত জাবির (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন বেদুইন নবী করিমের (ﷺ)নিকট
এসে বলেঃ আমার সামনে আপনার প্রতিপালকের গুণাবলী বর্ণনা করুন। তখন আল্লাহ তাআলা (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)সূরাটি
অবতীর্ণ করেন।২ অন্য এক রিওয়াইয়াতে আছে যে, কুরায়েশদের
প্রশ্নের জবাবে আল্লাহ তাআলা এ সূরাটি নাযিল করেন।
হযরত আবু হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “প্রত্যেক জিনিষেরেই নিসবত বা সম্বন্ধ রয়েছে, আল্লাহর নিসবত হলো (اللَّهُ الصَّمَدُ. قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ ) এবং (صَّمَد) তাঁকেই বলা হয় যিনি অন্তসারশূন্য নন।” ৩
সহীহ বুখারীর কিতাবুত তাওহীদে নবী করীম (ﷺ)-এর
সহধর্মিনী হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর নবী (ﷺ)
একটি লোকের নেতৃত্বে একদল সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন। তাঁরা ফিরে এসে নবী করীম (ﷺ)কে
বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! যাঁকে আপনি আমাদের নেতা মনোনীত করেছেন তিনি প্রত্যেক
নামাযে কিরআতের শেষে (قُلْ هُوَ
اللَّهُ أَحَدٌ) সূরাটি পাঠ করতেন।” নবী করীম (ﷺ)
তাঁদেরকে বললেনঃ সে কেন এরুপ করতো তা তোমরা তাকে জিজ্ঞেস কর তো? তাঁকে জিজ্ঞেস
করা হলে উত্তরে তিনি বলেনঃ এ সূরায় আল্লাহর রাহমানুর রাহীমের গুণাবলী বর্ণনা করা
হয়েছে,
এ কারণে এ সূরা পড়তে আমি খুব ভালোবাসি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বললেনঃ “তাকে জানিয়ে দাও
যে, আল্লাহও তাকে
ভালোবাসেন।”
সহীহ বুখারীর কিতাবুস সলাতে হযরত আনাস (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
একজন আনসারী মজজিদে কুবার ইমাম ছিলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি সূরা
ফাতিহা পাঠ করার পরই সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। তারপর কুরআনে অন্য অংশ পছন্দমত পড়তেন।
একদিন মুক্তাদী তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “আপনি সূরা ইখলাস পাঠ করেন, তহারপর অন্য
সূরাও এর সাথে মিলিয়ে দেন,
কি ব্যাপার?
হয় শুধু সূরা ইখলাস পড়ুন অথবা এটা ছেড়ে দিয়ে অন্য সূরা পড়ুন।” আনসারী জবাব
দিলেনঃ “আমি যেমন করছি
তেমনি করবো,
তোমাদের ইচ্ছা হলে আমাকে ইমাম হিসেবে রাখো, না হলে বলো, আমি তোমাদের
ইমামতি ছেড়ে দিচ্ছি।
মুসল্লিরা দেখলেন যে, এটা মুশকিল ব্যাপার! কারণ উপস্থিত সকলের মধ্যে তিনিই ছিলেন ইমামতির সবচেয়ে যোগ্য ব্যক্তি। তাই তাঁর বিদ্যামানতায় তাঁরা অন্য কারো ইমামতি মেনে নিতে পারলেন না (সুতারাং তিনিই ইমাম থেকে গেলেন)। একদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেখানে গমন করলে মুসল্লিরা তাঁর কাছে এ ঘটনা ব্যক্ত করলেন। তিনি তথন ঐ ইমামকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “তুমি মুসল্লীদের কথা মানো না কেন? প্রত্যেক রাকায়াতে সূরা ইখলাস পড় কেন?” ইমাম সাহেব উত্তরে বললেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ) এ সূরার প্রতি আমার বিশেষ আকর্ষন রয়েছে।” তাঁর একথা শুনে রাসুলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে বললেনঃ “এ সূরার প্রতি তোমার আসক্তি ও ভালবাসা তোমাকে জান্নাতে পৌঁছিযে দিয়েছে।”
মুসনাদে আহমদে ও জামে তিরমিযীতে হযরত আনাস (رضي الله عنه)
থেকে বর্ণিত আছে যে,
একটি লোক এসে রাসূলূল্লাহ (ﷺ)-কে
বললেনঃ “
হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! আমি (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
এই সূরাটিকে ভালবাসি।”
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁকে বললেনঃ “তোমার এ ভালবাসা তোমাকে
জান্নাতে প্রবিষ্ট করবে।”
সহীহ বুখারীতে হযরত আবূ সাঈদ (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
একটি লোক অন্য একটি লোককে রাত্রিকালে বারবার (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
এ সূরাটি পড়তে শুনে সকালে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর
নিকট এসে এ ঘটনাটি বর্ণনা করেন। লোকটি সম্ভবতঃ ঐ লোকটির এ সূরা পাঠকে হালকা
সওয়াবের কাজ মনে করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
তাঁকে বললেনঃ “যে সত্ত্বার
হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! এ সূরা কুরআনের এক
তৃতীয়াংশের সমতূল্য।”
সহীত বুখারীতে হযরত আবূ সাঈদ (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদেরকে বললেনঃ “তোমরা প্রত্যেকেই
কি কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠ করতে পারবে না?” সাহাবীদরে কাছে এটা খুবই
কষ্ট সাধ্য মনে হলো। তাই,
তাঁরা বললেনঃ “হে আল্লাহর
রাসূল (ﷺ)! আমাদের মধ্যে কার এ ক্ষমতা আছে?” তখন রাসূলূল্লাহ
(ﷺ)
তাঁদেরকে বললেনঃ “জেনে রেখো যে, (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
এ সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।”
মুসনাদে আহমদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
হযরত আবু আইয়ুব আনসারী (رضي
الله عنه) এক মজলিসে ছিলেন। তিনি
জনগণকে বলেন! “তোমাদের মধ্যে
কারো প্রত্যেক রাত্রে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠের ক্ষমতা আছে কি?” তাঁরা উত্তরে
বললেনঃ “আমাদের মধ্যে
কার এ ক্ষমতা থাকতে পারে?”
তখন তিনি বললেনঃ “জেনে রেখো যে, (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংমের (এর সমতুল্য)।” এমন সময় নবী
করীম (ﷺ)
সেখানে এসে পড়লেন এবং হযরত আবু আইয়ুব (رضي الله عنه)কে
এ কথা বলতে শুনলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ “আবূ আইয়ুব (রা) সত্য কথাই
বলেছে।”
জামে তিরমিযীতে হযরত আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবীদেরকে বললেনঃ “তোমরা সমবেত হও, আজ আমি
তোমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনাবো।” সাহাবীগণ সমবেত হলেন।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)ঘর থেকে বের হয়ে এসে (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
সূরাটি পাঠ করলেন। তারপর আবার ঘরে চলে গেলেন। সাহাবীরা তখন নিজেদের মধ্যে আলোচনা
করতে লাগলেনঃ “রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
তো আমাদেরকে কথা দিয়েছিলেন যে, আমাদেরকে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনাবেন, সম্ভবত আকাশ
থেকে কোন অহী এসেছে।”
এমন সময় রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বের হযে এসে বললেনঃ “আমি তোমাদেরকে
কুরআনের এক তৃতীয়াংশ শোনানোর জন্যে কথা দিয়েছিলাম। জেনে রেখো যে, এই সূরাটি
কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।”
হযরত আবূ দারদার (رضي الله عنه) বর্ণনায় রয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ)
সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “তোমরা কি প্রতিদিন কুরআনের এক তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত
করতে অপারগ?”
সাহাবীগণ আরয করলেনঃ “হে আল্লাহর
রাসূল (ﷺ)! এ ব্যাপারে আমরা খুবই দুর্বল এবং অক্ষম।” রাসুলুল্লাহ (ﷺ)
তখন বললেনঃ জেনে রেখো যে,
আল্লাহ তাআলা কুরআনকে তিনভাগে বিভক্ত করেছেন। (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
সূরাটি কুরআনের এক তৃতীয়াংশ। ৩
হযরত আবু হুরাইরা (রা)হতে বর্ণিত আছে যে, একবার রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
কোথাও হতে তাশরীফ আনলেন,
তাঁর সাথে হযরত আবূ হুরাইরাও (رضي الله عنه)
ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (ﷺ) একটি লোককে এ সূরাটি পাঠ করতে শুনে বললেনঃ “ওয়াজিব হয়ে
গেছে।”
হযরত আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)!
কি ওয়াজিব হয়ে গেছে?”
তিনি উত্তরে বললেনঃ “জান্নাত (ওয়াজিব
হয়ে গেছে)।”৪
হযরত আনাস (রাঃ হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে
বলতে শুনেছেনঃ “তোমাদের মধ্যে
কেউ কি রাত্রিকালে (قُلْ هُوَ
اللَّهُ أَحَدٌ) সুরাটি তিনবার পড়ার
ক্ষমতা রাখে না?
এ সূরা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমতুল্য।” ৫
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে হাবীব (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত,
তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ননা করেছেন যে, তিনি (তাঁর পিতা) বলেনঃ “আমরা পিপাসার্ত
ছিলাম,
চারদিকে রাতের গভীর অন্ধকার, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কখন
আসবেন এবং নামায পড়াবেন আমরা তারই অপেক্ষা করছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
এক সময় এলেন এবং আমার হাত ধরে বললেনঃ “পড়”। আমি বললামঃ কি
পড়বে?
তিনি বললেনঃ “প্রতিদিন সকাল
সন্ধ্যায় তিনবার সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে। প্রতিদিন তোমার
জন্যে দুই বারই যথেষ্ট।”
৬
সুনানে নাসাঈর একটি রিওয়াইয়াতে রয়েছেঃ “এ তিনটি সূরা পাঠ করলে
এগুলো তোমাকে প্রত্যে জিনিষ হতে রক্ষা করবে।”
মুসনাদে আহমদে হযরত তামীম দারী (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি নিম্নলিখিত
কালেমা দশবার পাঠ করবে সে চল্লিশ লাখ পুন্য লাভ করবে।
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহিদান আহাদান সামাদান লাম ইয়াত্তাখীজ সাহিবাতান ওয়ালা ওয়ালাদান ওয়ালাম ইয়াঁকুল্লাহু কুফুয়্যান আহাদ।”
অর্থাঃ- “আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই, তিনি এক একক, অভাবমুক্ত, তিনি স্ত্রীও গ্রহণ করেননি, সন্তানও না (অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীও নেই, সন্তানও নেই।) এবং তাঁর সমতূল্য কেউই নেই।” ৭
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহিদান আহাদান সামাদান লাম ইয়াত্তাখীজ সাহিবাতান ওয়ালা ওয়ালাদান ওয়ালাম ইয়াঁকুল্লাহু কুফুয়্যান আহাদ।”
অর্থাঃ- “আল্লাহ ছাড়া কোন মা’বূদ নেই, তিনি এক একক, অভাবমুক্ত, তিনি স্ত্রীও গ্রহণ করেননি, সন্তানও না (অর্থাৎ তাঁর স্ত্রীও নেই, সন্তানও নেই।) এবং তাঁর সমতূল্য কেউই নেই।” ৭
মুসনাদে আহমদে হযরত আনাস জুহনী (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলূল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা তার জন্যে জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরী করবেন।” এ কথা শুন হযরত
উমার (رضي الله عنه)
জিজ্ঞেস করলেনঃ “হে আল্লাহর
রাসূল (ﷺ)! কেউ যদি আরো বেশী পাঠ করে?” উত্তরে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন! “আল্লাহ এর চেয়েও অধিক ও
উত্তম প্রদানকারী (অর্থাৎ আল্লাহ পাক বেশীও দিতে পারবেন, তাঁর কোন অভাব
নেই।”)
হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (ﷺ)
বলেছেনঃ “যে (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
সূরাটি দশবার পাঠ করবে আল্লাহ তার জন্যে জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরী করবেন, যে বিশ বার করবে
তার জন্যে তৈরী করবেন জান্নাতে দুটি প্রাসাদ এবং যে ব্যক্তি ত্রিশবার পাঠ করবে তার
জন্যে আল্লাহ তাআলা জান্নাতে তিনটি প্রাসাদ তৈরী করবেন।” তখন হযরত উমার (رضي الله عنه)
বললেনঃ “হে আল্লাহর
রাসূল (ﷺ)! যদি আমরা এর চেয়েও বেশীবার পড়ি?” উত্তরে
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ “আল্লাহ এর চেয়েও অধিকদাতা।” ৮
হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي
الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বলেছেনঃ “যে পঞ্চাশবার (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
পাঠ করে আল্লাহ তাআলা তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মাফ করে দেন। ৯
হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
দিনে দুইশত বার পাঠ করে তার জন্যে আল্লাহ তা’আলা এক হাজার পাঁচশত পূন্য
লিথে থাকেন যদি তার উপর কোন ঋণ না থাকে।” ১০
জামে’
তিরমিযীর একটি হাদীসে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি প্রত্যহ দুইশত
বার এই সূরা পাঠ করে তার পঞ্চাশ বছরের গুনাহ মা’ফ করে দেয়া হয়, যদি সে ঋণগ্রস্ত
না হয়।”
জামে’
তিরমিযীর একটি গারীব বা দুর্বল হাদীসে রয়েছে যে, নবী করীম (ﷺ)
বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি
ঘুমোবার জন্যে বিছানায় যায়,
তারপর ডান পাশ ফিরে শয়ন করতেঃ একশতবার (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
পাঠ করে তাকে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা বলবেন: “হে আমার বান্দা!
তোমার ডান দিক দিয়ে জান্নাতে চলে যাও।”
হযরত আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বলেছেনঃ যে ব্যক্তি দুইশতবার (قُلْ
هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)পাঠ
করে তার দুইশত বছরের পাপ মিটিয়ে দেয়া হয়।” ১১
সুনানে নাসায়ীতে এই সূরার তাফসীরে হযরত বারীদাহ (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে মসজিদে প্রবেশ কালে দেখেন যে, একটি লোক নামায
পড়ছে এবং নিম্নলিখিত দুআ করছেঃ
“আল্লাহুম্মা
ইন্নি আসআলুকা বিআন্নি আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদুল্লাযী লাম
ইয়ালিদ ওয়ালাম ইয়ুলাদু ওয়ালাম ইয়াকুঁল্লাহু কুফুয়্যান আহাদ।”
অর্থাৎ- “হে আল্লাহ ! আমি
আপনার কাছে এ সাক্ষ্যসহ আবেদন করছি যে, আপনি ছাড়া কোন মাবূদ নেই, আপনি এক ও
অদ্বিতীয়,
আপনি কারো মুখাপেক্ষী নন, আপনি এমন সত্ত্বা যাঁর কোন সন্তান নেই এবং তিনিও
কারো সন্তান নন এবং যাঁর সমতুল্য কেউ নেই।” তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বললেনঃ “যাঁর হাতে আমার
প্রাণ রয়েছে সেই সত্তার শপথ! এ ব্যক্তি ইসমে আযরে সাথে দুআ করেছে। আল্লাহর এই মহান
নামের সাথে তাঁর কাছে কিছু যাঞ্চা করলে তিনি তা দান করেন এবং এই নামের সাথে দুআ
করলে তিনি তা কবুল করে থাকেন। ১২
হযরত জাবির ইবনেন আবদিল্লাহ (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “তিনটি কাজ এমন রয়েছে যে, যে ব্যক্তি
এগুলো সম্পাদন করে সে জান্নাতের দরজাগুলোর যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে
পারবে এবং জান্নাতের যে কোন হুরের সাথে ইচ্চছা বিবাহিত হতে পারবে।
১। যে ব্যাক্তি তার হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেয়, ২। নিজের গোপনীয় ঋণ পরিশোধ করে এবং
৩। প্রত্যেক ফরয নামাযের পরে দশবার (قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ) সূরাটি পাঠ করে।”
তখন হযরত আবূ বকর (رضي الله عنه) জিজ্ঞেস কররৈন, “হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)! এ তিনটি কাজের যে কোন একটি যদি কেউ করে?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন: “ একটি করলেও একই রকম সম্মান সে লাভ করবে।” ১৩
হযরত জাবীর ইবনে আবদিল্লাহ (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি তার ঘরে
প্রবেশের সময় (قُلْ هُوَ
اللَّهُ أَحَدٌ) পাঠ করবে আল্লাহ তাআলা
তার ঘরের বাসিন্দাদেরকে এবং প্রতিবেশীদেরকে অভাবমুক্ত করে দিবেন।” ১৪
মুসনাদে আবী ইয়ালায় হযরত আনাস ইবনে মালিক (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
তিনি বলেনঃ “
আমরা তাবুকের যুদ্ধ ক্ষেতে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর
সাথে ছিলাম। সূর্য এমন স্বচ্ছ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কারভাবে উদিত হলো যে, ইতিপূর্বে কখনো
এমনভাবে সূর্য উদিত হতে দেখা যায়নি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর
কাছে হযরত জিবরাঈল (আঃ) এলে তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “আজ এ রকম
উজ্জ্বল দীপ্তির সাথে সূর্যোদয়ের কারণ কি?” হযরত জিবরাঈল (আঃ) উত্তরে
বললেনঃ “আজ মদীনায়
মুআবিয়া ইবনে মুয়াবিয়ার (رضي الله عنه) ইনেতাকাল হয়েছে। তাঁর জানাযার নামাযে অংশগ্রহণের জণ্যে
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সত্তর হাজার ফেরেশতা আসমান থেকে পাঠিয়েছেন।” রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
প্রশ্ন করলেনঃ “তার কোন আমালের
কারণে এরুপ হয়েছে?’
জবাবে হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেনঃ “তিনি দিন রাত সব সময়
চলাফেরায় উঠা বসায় সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। আপনি যদি তার জানাযার নামাযে হাজির হতে
চান তবে চলুন,
আমি জমীন সংকীর্ণ করে দিচ্ছি।” রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
বললেনঃ “হ্যাঁ, তাই ভাল।” অতঃপর
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইবনে মুআবিয়া (رضي الله عنه)-এর
জানাযার নামায আদায় করলেন।”
১৫
মুসনাদে আবী ইয়ালায় এ হাদীসের অন্য একটি সনদও রয়েছে। তাতে বর্ণনাকারী ভিন্ন
ব্যক্তি। তাতে রয়েছে যে,
হযরত জিবরাঈল (আঃ) রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর
নিকট এসে বললেনঃ “মুআ’বিয়া ইবনে মুআ’বিয়া (رضي الله عنه)
ইন্তেকার করেছেন। আপনি কি তাঁর জানাযার নামায পড়তে চান?” রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
উত্তরে বললেনঃ “হ্যাঁ’ হযরত জিবরাঈল
(আঃ) তাঁর পালক দ্বারা জমীনে আঘাত করলেন। এর ফলে সমস্ত গাছ পালা, টিলা ইত্যাদি
নিচু হয়ে গেল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
মৃতের জানাজা দেখতে গেলন। তিনি নামায শুরু করলেন। তাঁর পিছনে ফেরেশতাদের দুটি
কাতার বা সারি ছিল। প্রত্যেক সারিতে সত্তর হাজার ফেরেশতা ছিলেন। রাসুলুল্লাহ (ﷺ)
হযরত জিবরাঈল (আঃ)কে জিজ্ঞেস করলেনঃ “মুআ’বিয়ার (رضي الله عنه)-এরুপ
মর্যাদার কারণ কি?”
জবাবে হযরত জিবরাঈল (আঃ) বললেনঃ “(قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ)
সূরাটির প্রতি তাঁর বিশেষ ভালবাসা এবং উঠতে বসতে চলতে ফিরতে ও আসতে যেতে এ
সূরাটি পাঠ করাই তাঁর এ মর্যাদার কারণ।” ১৬
মুসনাদে আহমদে হযরত উকবা ইবনে আমির (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
তিনি বলেনঃ “
একদা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর সাথে
মুসাফাহা (করমর্দন) করে বললামঃ “হে আল্লাহগর রাসূল (ﷺ)!
মুমিনের মুক্তি কোন আমলে রয়েছে?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “হে উকবা’ (رضي الله عنه) জিহবা সংযত
রেখো,
নিজরে ঘরেই বসে থাকো এবং নিজের পাপের কথা স্মরণ করে কান্নাকাটি করো।” পরে দ্বিতিয়বার
রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলে তিনি নিজেই আমার সাথে
করমর্দন করে বললেনঃ হে ‘উকবা’ (رضي الله عنه) ! আমি কি
তোমাকে তাওরাত,
ইঞ্জীল,
যবূর এবং কুরআনে অবতীর্ণ সমস্ত সূরার মধ্যে উৎকৃষ্ট সূরার কথা বলবো? আমি উত্তর
দিলামঃ “হ্যাঁ” হে আল্লাহর
রাসূল (ﷺ)! অবশ্যই বলুন, আপনার প্রতি আল্লাহ আমাকে
উৎসর্গিত করুন! তিনি তখন আমাকে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, এবং সূরা নাস
পাঠ করালেন,
তারপর বললেনঃ “হে উকবা’ (رضي الله عنه)! এ সূরাগুলো
ভুলো না। প্রতিদিন রাত্রে এগুলো পাঠ করো।” হযরত উকবা’ (رضي الله عنه) বলেনঃ এরপর
থেকে আমি এ সূরাগুলোর কথা ভুলিনি এবং এগুলো পাঠ করা ছাড়া আমি কোন রাত্রি কাটাইনি।
অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহর (ﷺ) সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং ত্বরিৎ তাঁর হাত আমার হাতের
মধ্যে নিয়ে আরয করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল (ﷺ)!
আমাকে উত্তম আমলের কথা বলে দিন। তখন তিনি বললেনঃ “শোনো, যে তোমার সাথে
সম্পর্ক ছিন্ন করবে তুমি তার সাথে সম্পর্ক মিলিত রাখবে, যে তোমাকে
বঞ্চিত করবে তুমি তাকে দান করবে। তোমার প্রতি যে যুলুম করবে তুমি তাকে ক্ষমা করবে।” ১৭
সহীহ বুখারীতে হযরত আয়েশা (رضي
الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)
রাত্রিকালে যখন বিছানায় যেতেন তখন এ তিনটি সূরা পাঠ করে উভয় হাতের তালুতে ফুঁ দিয়ে
সারা দেহের যত দূর পর্যন্ত হাত পৌঁছানো যায় ততদূর পর্যন্ত হাতে ছোঁয়া দিতেন।
প্রথমে মাথায়,
তারপর মুখে,
এবং এরপর দেহের সামনের অংশে তিনবার এভাবে হাতের ছোঁয়া দিতেন। ১৮
এ সূরাটি অবতীর্ণ হওয়ার কারণ (শানে নুযূল) পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইকরামা
(রঃ) বলেন যে,
ইয়াহুদিরা বলতোঃ “আমরা আল্লাহর
পুত্র (নাউযুবিল্লাহ) উযায়ের (আঃ)-এর উপাসনা করি।” আর খৃষ্টানরা
বলতোঃ “আমরা আল্লাহর
পুত্র (নাউযুবিল্লাহ) ঈসার (আঃ) পূজা করি।” মাজূসীরা বলতোঃ “আমরা চন্দ্র
সূর্য্যের উপাসনা করি।”
আবার মুশরিকরা বলতোঃ “আমরা মূর্তি
পুজা করি।”
আল্লাহ তাআলা তখন এই সূরা অবতীর্ণ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ হে নবী (ﷺ)! তুমি বলোঃ আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ এক অদ্বীতিয়। তাঁর মত আর কেউই নেই। তাঁর কোন উপদেষ্টা অথবা উযীর নেই। তিনি একমাত্র ইলাহ বা মাবূদ হওয়ার যোগ্য। নিজের গুণ বিশিষ্ট ও হিকমত সমৃদ্ধ কাজের মধ্যে তিনি একক ও বে-নযীর। তিনি সামাদ অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী। সমস্ত মাখলূক, সমগ্র বিশ্বজাহান তাঁর মুখাপেক্ষী।
আল্লাহ তাআলা তখন এই সূরা অবতীর্ণ করেন। আল্লাহ তাআলা বলেনঃ হে নবী (ﷺ)! তুমি বলোঃ আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ এক অদ্বীতিয়। তাঁর মত আর কেউই নেই। তাঁর কোন উপদেষ্টা অথবা উযীর নেই। তিনি একমাত্র ইলাহ বা মাবূদ হওয়ার যোগ্য। নিজের গুণ বিশিষ্ট ও হিকমত সমৃদ্ধ কাজের মধ্যে তিনি একক ও বে-নযীর। তিনি সামাদ অর্থাৎ অমুখাপেক্ষী। সমস্ত মাখলূক, সমগ্র বিশ্বজাহান তাঁর মুখাপেক্ষী।
হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত আছে যে, ‘সামাদ’ তাঁকেই বলে যিনি
নিজের নেতৃত্বে,
নিজের মর্যাদায়,
বৈশিষ্ট্যে ,
নিজের বুজর্গীতে,
শ্রেষ্ঠত্বে,
জ্ঞান-বিজ্ঞানের হিকমতে, বুদ্ধিমত্তায় সবারই চেয়ে অগ্রগণ্য। এই সব গুণ
শুধুমাত্র আল্লাহ জাল্লা শানুহুর মধ্যেই লক্ষ্য করা যায়। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তিনি
সবারই উপর বিজয়ী,
তিনি বেনিয়ায। ‘সামাদ’ এর একটা অর্থ এও
করা হয়েছে যে,
‘সামাদ’
হলেন তিনি যিনি সমস্ত মাখলুক ধ্বংস হযে যাওয়ার পরও অবশিষ্ট থাকেন। যিনি
চিরন্তন ও চিরবিদ্যমান। যাঁর লয় ও ক্ষয় নেই এবং যিনি সব কিছু হিফাযতকারী। যাঁর
সত্তা অবিনশ্বর এবং অক্ষয়।
হযরত ইকরামা (রঃ) বলেন যে, (صَّمَدُ) সেই সত্তা যিনি কোন কিছু আহারও করেন না। এবং যাঁর মধ্য হতে কোন কিছু বেরও হয়
না। আর যিনি কাউকেও বের করেন না। অর্থাৎ তিনি কাউকেও জন্ম দেন না। তাঁর কোন সন্তান
সন্তুতি নেই এবং তিনিও কারে সন্তান নন। তাঁর পিতা মাতা নেই। এ তাফসীর খুবই উত্তম ও
উৎকৃষ্ট। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ)-এর রিওয়াইয়াতে হযরত উবাই ইবনে কা’ব (رضي الله عنه)
থেকে উপরোক্ত বর্ণনা উল্লিখিত রয়েছে। বহু সংখ্যক সাহাবী ও তাবেয়ী থেকে বর্ণিত আছে
যে, সামাদ এমন
জিনিসকে বলা হয় যা অন্তঃসার শূণ্য নয়, যার পেট নেই। শা’বী (রঃ) বলেন যে, ‘সামাদ’ এর অর্থ হলো
যিনি পানাহার করেন না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদাহ (রঃ) বলেন যে, ‘সামাদ’ এমন নূরকে বলা
হয় যা উজ্জ্বল,
রওশন ও দীপ্তিময়।
একটি মারফু হাদীসেও রয়েছে যে, ‘সামাদ’ এমন এক সত্তা যাঁর পেট
নেই। অর্থাৎ যিনি আহরের প্রয়োজনীয়তা থেকে মুক্ত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ হাদীসটি
মারফূ নয়,
বরং মাওকূফ।
হাফিয আবূল কাসিম তিবরানী (রঃ) তাঁর আস সুন্নাহ গ্রন্থে ‘সামাদ’এর উপরোক্ত সব
তাফসীর উল্লেখ করে লিখেছেন যে, আসলে এ সব কথাই সত্য ও সঠিক। উল্লিখিত সমস্ত গুণ
এবং বৈশিষ্ট্য আমাদরে মহান প্রতিপালকের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। সবাই তাঁর
মুখাপেক্ষী,
তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সবচেয়ে বড়। তাঁর আহারের প্রয়োজন নেই। সবই ধ্বংস হয়ে যাবে, কিন্তু তিনি
চিরন্তন। তাঁর লয় নেই,
ক্ষয় নেই। তিনি অবিনশ্বর।
এরপর ইরশাদ হচ্ছেঃ আল্লাহর সন্তান সন্তুতি নেই, পিতা মাতা নেই, স্ত্রী নেই।
যেমন কুরআন কারীমের অন্যত্র রয়েছেঃ
.
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُ وَلَدٌ وَلَمْ تَكُن لَّهُ صَاحِبَةٌ ۖ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
.
অর্থাৎ- “তিনি আসমান ও জমীনের সৃষ্টিকর্তা, কি করে তাঁর সন্তান হতে পারে? তাঁর তো স্ত্রী নেই, সকল জিনিস তো তিনিই সৃষ্টি করেছেন!” (৬ঃ ১০১) অর্থাৎ তিনি সব কিছুর স্রষ্টা ও মালিক, এমতাবস্থায় তাঁর সৃষ্টি ও মালিকানায় সমকক্ষতার দাবীদার কে হবে? অর্থাৎ তিনি উপরাক্ত সমস্ত আয়েব থেকে মুক্ত ও পবিত্র। যেমন কুরআনের অন্যত্র রয়েছেঃ
.
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا [١٩:٨٨]
لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا [١٩:٨٩]
تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا [١٩:٩٠]
أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدًا [١٩:٩١]
وَمَا يَنبَغِي لِلرَّحْمَٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا [١٩:٩٢]
إِن كُلُّ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَٰنِ عَبْدًا [١٩:٩٣]
لَّقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا [١٩:٩٤]
وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا [١٩:٩٥]
.
অর্থাৎ- “তারা বলেঃ দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এক বীভৎস কথার অবতারণা করছো; এতে যেন আকাশমণ্ডলী বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে ও পর্বতমণ্ডলী চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে। যেহেতু তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্যে শোভনীয় নয়। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকট উপস্থিত হবে না বান্দারুপে। তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গণনা করেছেন। আর কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়।” (১৯ঃ ৮৮-৯৫)
.
بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُ وَلَدٌ وَلَمْ تَكُن لَّهُ صَاحِبَةٌ ۖ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
.
অর্থাৎ- “তিনি আসমান ও জমীনের সৃষ্টিকর্তা, কি করে তাঁর সন্তান হতে পারে? তাঁর তো স্ত্রী নেই, সকল জিনিস তো তিনিই সৃষ্টি করেছেন!” (৬ঃ ১০১) অর্থাৎ তিনি সব কিছুর স্রষ্টা ও মালিক, এমতাবস্থায় তাঁর সৃষ্টি ও মালিকানায় সমকক্ষতার দাবীদার কে হবে? অর্থাৎ তিনি উপরাক্ত সমস্ত আয়েব থেকে মুক্ত ও পবিত্র। যেমন কুরআনের অন্যত্র রয়েছেঃ
.
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا [١٩:٨٨]
لَّقَدْ جِئْتُمْ شَيْئًا إِدًّا [١٩:٨٩]
تَكَادُ السَّمَاوَاتُ يَتَفَطَّرْنَ مِنْهُ وَتَنشَقُّ الْأَرْضُ وَتَخِرُّ الْجِبَالُ هَدًّا [١٩:٩٠]
أَن دَعَوْا لِلرَّحْمَٰنِ وَلَدًا [١٩:٩١]
وَمَا يَنبَغِي لِلرَّحْمَٰنِ أَن يَتَّخِذَ وَلَدًا [١٩:٩٢]
إِن كُلُّ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ إِلَّا آتِي الرَّحْمَٰنِ عَبْدًا [١٩:٩٣]
لَّقَدْ أَحْصَاهُمْ وَعَدَّهُمْ عَدًّا [١٩:٩٤]
وَكُلُّهُمْ آتِيهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَرْدًا [١٩:٩٥]
.
অর্থাৎ- “তারা বলেঃ দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এক বীভৎস কথার অবতারণা করছো; এতে যেন আকাশমণ্ডলী বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে ও পর্বতমণ্ডলী চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে। যেহেতু তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্যে শোভনীয় নয়। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে দয়াময়ের নিকট উপস্থিত হবে না বান্দারুপে। তিনি তাদেরকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি তাদেরকে বিশেষভাবে গণনা করেছেন। আর কিয়ামতের দিন তাদের সকলেই তাঁর নিকট আসবে একাকী অবস্থায়।” (১৯ঃ ৮৮-৯৫)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
.
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا ۗ سُبْحَانَهُ ۚ بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ [٢١:٢٦]
لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ [٢١:٢٧]
.
অর্থাৎ-“তারা বলে যে, দয়াময়, সন্তান গ্রহণ করেছেন, অথচ আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, বরং তারা তাঁর সম্মানিত বান্দা। কথার দিক থেকেও এই বান্দাসমূহ আল্লাহকে অতিক্রম করে না, বরং তারা আল্লাহর ফরমান যথারীতি পালন করে।” (২১ঃ ২৬-২৭)
.
وَقَالُوا اتَّخَذَ الرَّحْمَٰنُ وَلَدًا ۗ سُبْحَانَهُ ۚ بَلْ عِبَادٌ مُّكْرَمُونَ [٢١:٢٦]
لَا يَسْبِقُونَهُ بِالْقَوْلِ وَهُم بِأَمْرِهِ يَعْمَلُونَ [٢١:٢٧]
.
অর্থাৎ-“তারা বলে যে, দয়াময়, সন্তান গ্রহণ করেছেন, অথচ আল্লাহ তা থেকে পবিত্র, বরং তারা তাঁর সম্মানিত বান্দা। কথার দিক থেকেও এই বান্দাসমূহ আল্লাহকে অতিক্রম করে না, বরং তারা আল্লাহর ফরমান যথারীতি পালন করে।” (২১ঃ ২৬-২৭)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেনঃ
.
وَجَعَلُوا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِنَّةِ نَسَبًا ۚ وَلَقَدْ عَلِمَتِ الْجِنَّةُ إِنَّهُمْ لَمُحْضَرُونَ [٣٧:١٥٨]
سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يَصِفُونَ [٣٧:١٥٩]
.
অর্থাৎ- “তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে রেখেছে। অথচ জ্বিনেরা জানে তাদেরকে ও শাস্তির জন্যে উপস্থিত করা হবে। আল্লাহ তা’আলা তাদের বর্ণিত দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত ও পবিত্র।” (৩৭ঃ ১৫৮-১৫৯)
সহীহ বুখারীতে রয়েছে যে, কষ্টদায়ক কথা শুনে এতো বেশী ধৈর্য ধারণকারী
আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। মানুষ বলে যে, আল্লাহর সন্তান রয়েছে, তবুও তিনি তাকে
অন্ন দান করছেন,
স্বাস্থ্য ও সুস্থতা দান করছেন।
সহীহ বুখারীতে হযরত আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه)
হতে বর্ণিত আছে যে,
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ আদম সন্তান
আমাকে অবিশ্বাস করে,
অথচ এটা তার জন্যে সমীচীন নয়। সে আমাকে গালি দেয়, অথচ এটাও তার
জন্যে সমীচীন ও সঙ্গত নয়। তারা আমাকে অবিশ্বাস করে বলে যে, আমি নাকি প্রথমে
তাকে যেভাবে সৃষ্টি করেছি পরে আবার সেভাবে পুনরুজ্জীবিত করতে পারবে না। অথচ
দ্বিতীয়বারের সৃষ্টির চেয়ে প্রথমবারের সৃষ্টি তো সহজ ছিল না। যদি আমি প্রথমবারের
সৃষ্টিতে সক্ষম হয়ে থাকি তবে দ্বিতীয়বারের সৃষ্টিতে সক্ষম হবো না কেন?” আর সে আমাকে
গালি দিয়ে বলে যে,
আমার নাকি সন্তান রয়েছে, অথচ আমি একাকী, আমি অদ্বিতীয়, আমি অভাবমুক্ত ও
অমুখাপেক্ষী। আমার কোন সন্তান সন্তুতি নেই। আমার পিতা মাতা নেই, এবং আমার
সমতূল্য কউ নেই।”
==========================
টীকাঃ
১. ইমাম তিরমিযী (রঃ), ইমাম ইবনে জারীর (রঃ), ইমাম ইবনে আবী হাতিমও (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে সহীহ বলেছেন।
২. এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন হা’ফিয আবূ ইয়া’লা মুসিলী (রঃ)।
৩. এ হাদীসটি ইমাম তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
৪. এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ননা করেছেন। এ ধরনের রিওয়াইয়াত সাহাবীদের একটি বড় জামায়াত হতে বর্ণিত রয়েছে।
৫. এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরিমিযী (রঃ) এটাকে হাসান, সহীহ, গারীব বলেছেন।
৬. এ হাদীসটি হাসিম আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দূর্বল।
৭. এ হাদীস আবদুল্লাহ ইবনে ইমাম আহমদ (রঃ), ইমাম আবূ দাউদ (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
৮. হাদীসের একজন বর্ণনাকারী খলীল ইবনে মুররাহ রয়েছেন। ইমাম বুখারী (রঃ) এবং অন্যান্য ইমাম তাঁকে খুবই দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন।
৯. এ হাদীসটি মুরসাল এবং উত্তম। দারিমী (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন।
১০. এ হাদীসটি হা’ফিয আবূ ইয়া’লা মূসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দূর্বল।
১১. এটাও বর্ণনা করেছেন হাফিয আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ)। এর সনদও দুর্বল।
১২. এ হাদীসটি আবূ বকর বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
১৩. এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ী (রঃ) ছাড়াও অন্যান্য আসহাবে সুনানও বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান গারীব বলেছেন।
১৪. এ হাদীসটি হাফিয আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
১৫. হাফিয আবূল কাসিম তিবরানী (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি যঈফ বা দূর্বল।
১৬. এ হাদীসটি হাফিয আবূ বকর বায়হাকীও (রঃ) তাঁর ‘দালাইলুন নবুওয়াত’ নামক গ্রন্থে ইয়াযীদ ইবনে হারুণের (রঃ) রিওয়াইয়াতে বর্ণনা করেছেন। ইয়াযীদ (রঃ) আ’লা ইবনে মুহাম্মদ (রঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এই আ’লা মাওযূ হাদীস বর্ণনা করে থাকেন বলে তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই ভাল জানেন।
১৭. এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকীও (রঃ) বর্ণনা করেছেন। তাঁর এ হাদীসের সনদে মাহাবুব ইবনে হিলাল রয়েছেন। আবূ হাতিম রাযী (রঃ) বলেন যে, ইনি বর্ণনাকারী হিসেবে মাশহুর নন। মুসনাদে আবী ইয়ালায় বর্ণিত এ হাদীসের বণৃনাকারী ইনি নন, সেখানে এর স্থলে আবূ আবদিল্লাহ ইবনে মাসউদ রয়েছেন। কিন্তু মাহবুব ইবনে হিলালের বর্ণনাই যথার্থ বলে মনে হয়। কারণ আবূ আবদিল্লাহ ইবনে মাহবুব রিওয়াইয়াতের আরো বহু সনদ রয়েছে এবং সব সনদই যঈফ বা দূর্বল।
১৮. এ হাদীসের কিছু অংশ ইমাম তিরমিযী (রঃ) তাঁর জামে তিরমিযীতে ‘যুহদ’ শীর্ষক অধ্যায়ে সংযোজন করেছেন এবং বলেছেন যে, এ হাদীসটি হাসান। মুসনাদে আহমদেও এ হাদীসের আরেকটি সনদ রয়েছে।
১৯. এ হাদীসটি সুনানে আবী দাউদেও বর্ণিত হয়েছে।
==========================
টীকাঃ
১. ইমাম তিরমিযী (রঃ), ইমাম ইবনে জারীর (রঃ), ইমাম ইবনে আবী হাতিমও (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে সহীহ বলেছেন।
২. এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন হা’ফিয আবূ ইয়া’লা মুসিলী (রঃ)।
৩. এ হাদীসটি ইমাম তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
৪. এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ননা করেছেন। এ ধরনের রিওয়াইয়াত সাহাবীদের একটি বড় জামায়াত হতে বর্ণিত রয়েছে।
৫. এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরিমিযী (রঃ) এটাকে হাসান, সহীহ, গারীব বলেছেন।
৬. এ হাদীসটি হাসিম আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দূর্বল।
৭. এ হাদীস আবদুল্লাহ ইবনে ইমাম আহমদ (রঃ), ইমাম আবূ দাউদ (রঃ) ও ইমাম নাসায়ী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
৮. হাদীসের একজন বর্ণনাকারী খলীল ইবনে মুররাহ রয়েছেন। ইমাম বুখারী (রঃ) এবং অন্যান্য ইমাম তাঁকে খুবই দুর্বল বলে উল্লেখ করেছেন।
৯. এ হাদীসটি মুরসাল এবং উত্তম। দারিমী (রঃ) এটা বর্ণনা করেছেন।
১০. এ হাদীসটি হা’ফিয আবূ ইয়া’লা মূসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দূর্বল।
১১. এটাও বর্ণনা করেছেন হাফিয আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ)। এর সনদও দুর্বল।
১২. এ হাদীসটি আবূ বকর বাযযার (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
১৩. এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ী (রঃ) ছাড়াও অন্যান্য আসহাবে সুনানও বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ) এটাকে হাসান গারীব বলেছেন।
১৪. এ হাদীসটি হাফিয আবূ ইয়ালা মুসিলী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
১৫. হাফিয আবূল কাসিম তিবরানী (রঃ) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি যঈফ বা দূর্বল।
১৬. এ হাদীসটি হাফিয আবূ বকর বায়হাকীও (রঃ) তাঁর ‘দালাইলুন নবুওয়াত’ নামক গ্রন্থে ইয়াযীদ ইবনে হারুণের (রঃ) রিওয়াইয়াতে বর্ণনা করেছেন। ইয়াযীদ (রঃ) আ’লা ইবনে মুহাম্মদ (রঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। এই আ’লা মাওযূ হাদীস বর্ণনা করে থাকেন বলে তাঁর নামে অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলাই ভাল জানেন।
১৭. এ হাদীসটি ইমাম বায়হাকীও (রঃ) বর্ণনা করেছেন। তাঁর এ হাদীসের সনদে মাহাবুব ইবনে হিলাল রয়েছেন। আবূ হাতিম রাযী (রঃ) বলেন যে, ইনি বর্ণনাকারী হিসেবে মাশহুর নন। মুসনাদে আবী ইয়ালায় বর্ণিত এ হাদীসের বণৃনাকারী ইনি নন, সেখানে এর স্থলে আবূ আবদিল্লাহ ইবনে মাসউদ রয়েছেন। কিন্তু মাহবুব ইবনে হিলালের বর্ণনাই যথার্থ বলে মনে হয়। কারণ আবূ আবদিল্লাহ ইবনে মাহবুব রিওয়াইয়াতের আরো বহু সনদ রয়েছে এবং সব সনদই যঈফ বা দূর্বল।
১৮. এ হাদীসের কিছু অংশ ইমাম তিরমিযী (রঃ) তাঁর জামে তিরমিযীতে ‘যুহদ’ শীর্ষক অধ্যায়ে সংযোজন করেছেন এবং বলেছেন যে, এ হাদীসটি হাসান। মুসনাদে আহমদেও এ হাদীসের আরেকটি সনদ রয়েছে।
১৯. এ হাদীসটি সুনানে আবী দাউদেও বর্ণিত হয়েছে।
(সূরাঃ ইখলাস এর
তাফসীর সমাপ্ত)
(তাফসীর ইবনে কাসীর, অষ্টাদশ খণ্ড, ৩১৬-৩২৭ পৃষ্ঠা।)
(তাফসীর ইবনে কাসীর, অষ্টাদশ খণ্ড, ৩১৬-৩২৭ পৃষ্ঠা।)
No comments:
Post a Comment