সূরাঃ ফাজর/৮৯, মাক্কী (আয়াত : ৩০, রুকূ' : ১)



সুনানে নাসাঈতে হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত মুআয (রাঃ) নামায পড়াচ্ছিলেন, একটি লোক এসে ঐ নামাযে শামিল হয়। হযরত মুআয (রাঃ) নামাযে কিরআত লম্বা করেন। তখন ঐ আগন্তুক জামাআত ছেড়ে দিয়ে মসজিদের এক কোণে গিয়ে একাকী নামায আদায় করে চলে যায়। হযরত মুআয (রাঃ) এ ঘটনা জেনে ফেলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর দরবারে হাযির হয়ে অভিযোগের আকারে এ ঘটনা বিবৃত করেন। রাসূলুল্লাহ (সঃ) তখন ঐ লোকটিকে ডেকে নিয়ে কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বলেঃহে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি এছাড়া কি করবো? আমি তার পিছনে নামায শুরু করেছিলাম, আর তিনি শুরু করেছিলেন লম্বা সূরা। তখন আমি জামাআত ছেড়ে দিয়ে মসজিদের এক কোণে একাকী নামায আদায় করে নিয়েছিলাম। অতঃপর মসজিদ হতে বের হয়ে এসে আমার উষ্ট্রীকে ভূষি দিয়েছিলাম।তার এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সঃ) হযরত মুআয (রাঃ)-কে বলেন যে, হে মুআয (রাঃ)! তুমি তো জনগণকে ফিত্নার মধ্যে নিক্ষেপকারী। তুমি কি (سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى) (وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا) (وَالْفَجْرِ) এবং (وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى) ; এই সূরাগুলো পড়তে পার না?”
--
দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
১। শপথ উষার,
২। শপথ দশ রজনীর,
৩। শপথ জোড় ও বেজোড়ের
৪। এবং শপথ, রজনীর যখন ওটা গত হতে থাকে।
৫। নিশ্চয়ই এর মধ্যে শপথ রয়েছে জ্ঞানবান ব্যক্তির জন্যে ।
৬। তুমি কি দেখোনাই তোমার প্রতিপালক কি করেছিলেন আদ বংশের-
৭। ইরাম গোত্র প্রতি যারা অধিকারী ছিল সূউচ্চ প্রাসাদের?
৮। যার সমতুল্য অন্য কোন নগরে নির্মিত হয়নি
৯। এবং সামুদের প্রতি? যারা উপত্যকার পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল?
১০। এবং বহু সৈন্য শিবিরের অধিপতি ফিরাউনের প্রতি?
১১। যারা নগরসমূহে উদ্ধতাচরণ করেছিল।
১২। অনন্তর তথায় তারা বহু  বিপ্লব (সংঘটিত) করেছিল।
১৩। সুতরাং তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির কশাঘাত হানলেন।
১৪। নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক সবই দর্শন করেন ও সময়ের প্রতীক্ষায় থাকেন।
--
এটা সর্বজন বিদিত যে, ফজরের অর্থ হলো সকাল বেলা। হযরত আলী (রাঃ), হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ), হযরত ইকরামা (রঃ), হযরত মুজাহিদ (রঃ) এবং হযরত সুদ্দীর (রঃ) এটা উক্তি। হযরত মাসরুক (রঃ) এবং হযরত মুহাম্মদ ইবনে কাব (রঃ) বলেন যে, এর দ্বারা বিশেষভাবে ঈদুল আযহার সকালবেলাকে বুঝানো হয়েছে। আর ওটা হলো দশ রাত্রির সমাপ্তি। কারো কারো মতে এর অর্থ হলো সকাল বেলার নামায। আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, এর দ্বারা পুরো দিনকেই বুঝানো হয়েছে।

দশ রজনী দ্বারা যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ রাত্রিকে বুঝানো হয়েছে, যেমন এ কথা হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ), হযরত ইবনে যুবায়ের (রাঃ), হযরত মুজাহিদ (রঃ) এবং পূর্ব ও পর যুগীয় আরো বহু গুরুজন বলেছেন। সহীহ বুখারীতে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে মারফুরূপে বর্ণিত আছেঃকোন ইবাদতই এই দশ দিনের ইবাদত হতে উত্তম নয়।রাসূলুল্লাহকে (সঃ) জিজ্ঞেস করা হলোঃআল্লাহর পথে জিহাদও কি নয়?" তিনি উত্তরে বললেনঃনা, আল্লাহর পথে জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, যে ব্যক্তি নিজের জান-মাল নিয়ে বেরিয়েছে, তারপর ওগুলোর কিছুই নিয়ে ফিরেনি (তার কথা স্বতন্ত্র)।

কেউ কেউ বলেছেন, যে, এর দ্বারা মুহররমের প্রথম দশদিনকে বুঝানো হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো রমযান মাসের প্রথম দশ দিন। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই সঠিকতমঅর্থাৎ যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশদিন।

মুসনাদে আহমদে হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সঃ) বলেছেনঃ (عشر) হলো ঈদুল আযহার দিন, (وتر) হলো আরাফার দিন এবং (شفع) হলো কুরবানীর দিন।এ হাদীসের সনদে কোন প্রকার গরমিল নেই। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।

(وتر) হলো আরাফার দিন। এটা যদি নবম তারিখ হয়ে থাকে তাহলে (شفع) শব্দের অর্থ হবে দশম তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আযহার দিন।

হযরত ওয়াসিল ইবনে সায়েব (রঃ) হযরত আতা (রঃ) কে জিজ্ঞেস করেনঃ (وتر) দ্বারা কি বিতরের নামায উদ্দেশ্য?” উত্তরে তিনি বলেনঃনা, বরং (شفع) হলো আরাফার দিন এবং (وتر) হলো ঈদুল আযহার রাত।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ) খুৎবাহ দিচ্ছিলেন, এমন সময় একটি লোক দাঁড়িয়ে বললোঃহে আমীরুল মুমিনীন! (شفع) কি এবং (وتر) কি ?" তিনি জবাবে বললেনঃআল্লাহ তা'আলা যে বলেছেনঃ
فَمَن تَعَجَّلَ فِي يَوْمَيْنِ فَلاَ إِثْمَ عَلَيْهِ
 (: ২০৩) এখানে দুই দিন দ্বারা (شفع) এবং وَمَن تَأَخَّرَ فَلا إِثْمَ عَلَيْهِ এখানে একদিন দ্বারা (وتر) কে বুঝানো হয়েছে।তিনি আরো বলেছেন যে,  (ايام تشريق) (১১ই, ১২ই ও ১৩ই যিলহজ্জ) এর মাঝামাঝি দিন হলো (شفع) এবং (وتر) হলো শেষ দিন।

সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃআল্লাহ তা'আলার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এই নামগুলো মুখস্থ করে নিবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তিনি (আল্লাহ) বেতর বা বেজোড় এবং তিনি বেতরকে ভালবাসেন।হযরত হাসান বসরী (রঃ) এবং যায়েদ ইবনে আসলাম (রঃ) বলেন যে, এর অর্থ হলো সমস্ত সৃষ্টি জগত। এর মধ্যে (شفع) রয়েছে এবং (وتر) -ও রয়েছে। আবার এটাও বলা হয়েছে যে (شفع) হলো ফজরের নামায এবং (وتر) হলো মাগরিবের নামায। এটাও উল্লিখিত হয়েছে যে, মাখলুক বা সৃষ্টিজগত হলো (شفع) এবং (وتر) হলেন আল্লাহ 

এ উক্তিও রয়েছে যে, (شفع) এর অর্থ হলো জোড়া জোড়া এবং (وتر) হলেন আল্লাহ রাব্বল আলামীন। যেমন আসমান-জমীন, জল-স্থল, মানুষ-জ্বিন, সূর্য-চন্দ্র ইত্যাদি। কুরআন কারীমে রয়েছে :
وَمِن كُلِّ شَيْءٍ خَلَقْنَا زَوْجَيْنِ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ
অর্থাৎআমি সকল জিনিসকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যেন তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পার।” (৫১ : ৪৯) অর্থাৎ যেন তোমরা জানতে পার যে, সকল জিনিসের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ রাব্বল আলামীন, তাঁর কোন শরীক নেই। এ

টাও বলা হয়েছে যে, এর অর্থ হলো জোড় বেজোড়ের গণনা। একটি হাদীসে রয়েছে যে, (شفع)এর অর্থ হলো দুদিন এবং (وتر) এর অর্থ হলো তৃতীয় দিন। এক বর্ণনায় রয়েছে যে, এর অর্থ হলো নামায, এতে জোড় রয়েছে, যেমন ফজরের দুই রাকআত এবং যুহর, আসর ও ইশার চার রাকআত। আবার বেজোড়েও রয়েছে যেমন মাগরিবের তিন রাকআত। একটি মারফু হাদীসে শুধু নামায অর্থেও এ শব্দ দুটির ব্যবহারের কথা রয়েছে। কোন কোন সাহাবী বলেছেন যে, এ দুটি শব্দ দ্বারা ফরয নামায উদ্দেশ্য। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন

এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ শপথ রাত্রির যখন তা গত হতে থাকে। আবার এ অর্থও করা হয়েছে যে, রাত্রি যখন আসতে থাকে। এটাই অধিক সমীচীন বলে মনে হয়। এ উক্তিটি (وَالْفَجْرِ) এর সাথে অধিক সঙ্গতিপূর্ণ। ফজর বলা হয় যখন রাত্রি শেষ হয়ে যায় এবং দিনের আগমন ঘটে ঐ সময়কে। কাজেই এখানে দিনের বিদায় ও রাত্রির আগমন অর্থ হওয়াই যুক্তিসংগত। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ
وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ
অর্থাৎশপথ রজনীর যখন ওর আগমন ঘটে এবং অন্ধকার ছড়িয়ে দেয় এবং শপসকালের যখন তা আসে ও আলো ছড়িয়ে দেয়।” (৮১:১৭-১৮)

ইকরামা (রঃ) বলেন যে, এখানে অর্থ হলো মুযদালিফার রাত্রি। (حِجْرٍ) এর অর্থ হচ্ছে আকল বা বিবেক। হিজর বলা হয় প্রতিরোধ বা বিরতকরণকে। বিবেক ও
ভ্রান্তি, মিথ্যা ও মন্দ থেকে বিরত রাখে বলে ওকে আকল বা বিবেক বলা হয় ।
(حخر البيت) এ কারণেই বলা হয় যে, কাবাতুল্লাহর যিয়ারতকারীদেরকে শামী দেয়াল থেকে এই (حِجْرٍ) বিরত রাখে। এ থেকেই হিজরে ইয়াম মা শব্দ গৃহীত হয়েছে। এ কারণেই আরবের লোকেরা বলে থাকে (حخرا لحكم على فلان) অর্থাৎ শাসনকর্তা অমুককে বিরত রেখেছেন। যখন কোন লোককে বাদশাহ বাড়াবাড়ি করতে বিরত রাখেন তখন আরবরা একথা বলে থাকে।

আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ নিশ্চয়ই এর মধ্যে শপথ রয়েছে বোধসম্পন্ন ব্যক্তির জন্যে। কোথাও ইবাদত বন্দেগীর শপথ, কোথাও ইবাদতের সময়ের শপথ, যেমন হজ্জ, নামায ইত্যাদি। আল্লাহ তা'আলার পুণ্যবান বান্দারা তাঁর নৈকট্য লাভ করার জন্যে সচেষ্ট থাকে এবং তাঁর সামনে নিজেদের হীনতা প্রকাশ করে অনুনয় বিনয় করতে থাকে। পুণ্যবান নেককারদের গুণাবলী বর্ণনা করার পর আল্লাহ তা'আলা তাদের বিনয় ও ইবাদত বন্দেগীর কথা উল্লেখ করেছেন, সাথে সাথে বিদ্রোহী, হঠকারী, পাপী ও দুবৃত্তদেরও বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, হে নবী (সঃ)! তুমি কি দেখনি তোমার প্রতিপালক স্তম্ভসদৃশ আদ জাতির সাথে কি করে ছিলেন? কিভাবে তিনি তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন? তারা ছিল হঠকারী এবং অহংকারী। তারা আল্লাহর নাফরমানী করতো, রাসূলকে অবিশ্বাস করতো এবং নিজেদেরকে নানা প্রকারের পাপকর্মে নিমজ্জিত রাখতোতাদের নিকট আল্লাহর রাসূল হযরত হূদ (আঃ) আগমন করেছিলেন।

এখানে প্রথম আদ (আদেউলা) এর কথা বলা হয়েছে। তারা আদ ইবনে ইরম ইবনে আউস ইবনে সাম ইবনে নূহের (আঃ) বংশধর ছিল। আল্লাহ তা'আলা তাদের মধ্যকার ঈমানদারদেরকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং বাকি সব বেঈমানকে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। ক্রমাগত সাত রাত্র ও আট দিন পর্যন্ত ঐ সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় প্রবাহিত হয়েছিল। তাতে আদ সম্প্রদায়ের সমস্ত কাফির ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। তাদের একজনও ভয়াবহ শাস্তি হতে রক্ষা পায়নি। মাথা ও দেহ ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পড়ে রয়েছিল। কুরআনের মধ্যে কয়েক জায়গায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। সূরা আল হাককাহতেও এর বর্ণনা রয়েছে। সেখানে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ
وَأَمَّا عَادٌ فَأُهْلِكُوا بِرِيحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ
سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَثَمَانِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًا فَتَرَى الْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَى كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ
فَهَلْ تَرَى لَهُم مِّن بَاقِيَةٍ
- অর্থাৎআর আদ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচণ্ড ঝঞ্জা বায়ু দ্বারা; যা তিনি তাদের উপর প্রবাহিত করেছিলেন সপ্তরাত্রি ও অষ্টদিবস বিরামহীনভাবে। তখন তুমি উক্ত সম্প্রদায়কে দেখতে তারা সেথায় লুটিয়ে পড়ে আছে সারশূন্য বিক্ষিপ্ত খর্জুর কাণ্ডের ন্যায়। অতঃপর তাদের কাউকেও তুমি বিদ্যমান দেখতে পাও কি?” (৬৯ঃ ৬-৮)

(إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ) (ইরাম গোত্রের প্রতি-যারা অধিকারী ছিল সুউচ্চ প্রাসাদের) তাদের অতিরিক্ত পরিচয় প্রদানের জন্যে এটা (عطف بيان)  হয়েছে। তাদেরকে (ذَاتِ الْعِمَاد)  বলার কারণ এ যে, তারা দৃঢ় ও সুউচ্চ স্তম্ভ বিশিষ্ট গৃহে বসবাস করতোসমসাময়িক যুগের লোকদের তুলনায় তারা ছিল অধিক শক্তিশালী এবং দেহ সৌষ্ঠবের অধিকারী। এ কারণেই হযরত হূদ (আঃ) তাদেরকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেনঃ
وَاذكُرُواْ إِذْ جَعَلَكُمْ خُلَفَاء مِن بَعْدِ قَوْمِ نُوحٍ وَزَادَكُمْ فِي الْخَلْقِ بَسْطَةً فَاذْكُرُواْ آلاء اللّهِ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
অর্থাৎস্মরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে নূহ (আঃ)-এর সম্প্রদায়ের পরে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন এবং তোমাদের অবয়ব অন্য লোক অপেক্ষা শক্তিতে অধিকতর সমৃদ্ধ করেছেন। সুতরাং তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর, হয়ত তোমরা সফল কাম হবে।(আরাফ/৭ঃ৬৯) 

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
فاما عاد فاستكبروا في الأرض بغير الحق، وقالوا من أشد ما قوة أولم روا أن الله الى خلقم هو أشد منهم قوة.
অর্থাৎআদ সম্প্রদায় অন্যায়ভাবে ভূ-পৃষ্ঠে অহংকার ও ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছিল এবং বলেছিলঃ আমাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী আর কে আছে? তারা কি দেখে নাই যে, যে আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের চেয়ে অধিক শক্তিশালী।” (৪১ঃ১৫)
 আর এখানে আল্লাহ পাক বলেনঃ যার সমতুল্য (প্রাসাদ) কোন দেশে নির্মিত হয়নি। তারা খুবই দীর্ঘ দেহ ও অসাধারণ শক্তির অধিকারী ছিল। সেই যুগে তাদের মত দৈহিক শক্তির অধিকারী আর কেউ ছিল না। ইরাম ছিল তাদের রাজধানী। তাদেরকে স্তম্ভের অধিকারী বলা হতো কারণ তারা ছিল খুবই দীর্ঘ দেহী। তাদের মত অন্য কেউ ছিল না।

হযরত মিকদাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী করীম (সঃ)(إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ) এর উল্লেখ করে বলেনঃতাদের এতো বেশী শক্তি ছিল যে, তাদের কেউ উঠতো এবং একটি (প্রকাণ্ড) পাথর উঠিয়ে অন্য কোন সম্প্রদায়ের উপর নিক্ষেপ করতোএ পাথরে চাপা পড়ে ঐ সম্প্রদায়ের লোকেরা সবাই মারা যেতো

হযৱত আনাস ইবনে আইয়ায (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত সাওর ইবনে যায়েদ দাইলী (রঃ) বলেনঃআমি একটি পাতায় দেখেছি যে, তাতে লিখিত ছিলঃআমি শাদ্দাদ ইবনে আদ, আমি শুষ্ক মজবুত করেছি, আমি হাত মযবুত করেছি, আমি সাথে হাতের একটি ধনভাণ্ডৱ জমা করে রেখেছি। হযরত মুহাম্মদ (সঃ)-এর উম্মত এটা বের করবে।"  

অথবা এটা বলা যায় যে, তারা উৎকৃষ্ট উচ্চবিশিষ্ট গৃহে বাস করতোঅথবা বলা যায় যে, তারা ছিল উচ্চ স্তম্ভের অধিকারী। অথবা তারা ছিল উন্নতমানের অশর মালিক। অথবা তারা দীর্ঘ দেহের অধিকারী ছিল। অর্থাৎ তারা এক কওম বা সম্প্রদায় ছিল যাদের কথা কুরআনে সামূদ সম্প্রদায়ের সাথে বহু জায়গায় উল্লেখিত হয়েছে। এখানেও আদ ও সামূদ উভয় কওমের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।

কেউ কেউ বলেছেন যে, (إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ) হলো একটি শহর, তার নাম হয় তো দামেস্ক অথবা আলেকজান্দ্রিয়া। কিন্তু এ উক্তি সঠিক বলে অনুভূত হয় না। কারণ এতে আয়াতের অর্থে সতি পরিলক্ষিত হয় না। তাছাড়া এখানে এটা বুঝানো হয়েছে যে, প্রত্যেক হঠকারী বিশ্বাসঘাতককে আল্লাহ তা'আলা ধ্বংস করে দিয়েছেন যাদের নাম ছিল আলী, কোন শহরের কথা বুঝানো হয়নি। আমি এ সব কথা এখানে এ কারণেই বর্ণনা করেছি যে, যেন কতিপয় তাফসীরকারের অপব্যাখ্যায় কেউ বিভ্রান্ত না হয়। তাঁরা লিখেছেন যে, ইরম একটি শহরের নাম যায় একটি ইট সোনার ও অন্যটি রূপার, এভাবে শহরটি নির্মিত হয়েছে। আজ সেই শহরের বাড়ি-ঘর, বাগবাণীচা সবই সোনা-রূপার তৈরি, কংকর লো মুক্তা ও জওহর এবং মাটি হলো মিশক। ঝর্ণাসমূহ প্রবাহমান এবং ফল আরে বৃক্ষগুলো আনত। সেই শহরের বসবাস করার মত কোন মানুষ নেই। ঘর দুয়ার সব শূন্য। হাঁ হুঁ করার মতও কেউ নেই। এই শহর স্থানান্তরিত হতে থাকে, কখনো সিরিয়ায়, কখনো ইয়ামনে, কখনো ইরাকে এবং কখনো অন্য কোথাও। এসব অপকাহিনী বানী ইসরাইল বানিয়ে নিয়েছে। তারা এ সব মনগড়া গল্প তৈরি করে মুর্খদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে থাকে।
সালবী (রঃ) প্রমুখ গুরুজন বর্ণনা করেছেন যে, হযরত মুআবিয়ার (রাঃ) শাসনামলে এক বেদুঈন তার হারানো উট খোজ করার উদ্দেশ্যে এক জন-মানব শূন্য জঙ্গলে গিয়ে প্রবেশ করে। ঐ জঙ্গলে সে উপরোল্লিখিত গুণাবলী বিশিষ্ট একটি শহর দেখতে পায়। ঐ শহরে গিয়ে সে ঘোরাফেরা করে। তারপর ফিরে এসে জনগণের নিকট তা বর্ণনা করে। জনগণও তখন সেখানে গমন করে কিন্তু তারা সেখানে কিছুই দেখতে পায়নি।
ইমাম ইবনে আবী হাতিম (রঃ) এখানে এ ধরনের কাহিনী খুব লম্বা চওড়াভাবে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এ কাহিনীও সত্য নয়। বেদুঈনের কাহিনীটি যদি সনদের দিক দিয়ে সত্য বলে ধরে নেয়াও হয় তাহলে বলতে হয় যে, বেদুঈন মনে মনে এ কাহিনী কল্পনা করেছিল, ফলে তার দৃষ্টিভ্রম ঘটেছিল। সে ভেবে বসেছিল যে, সে যা দেখেছে তা সেই কল্পিত শহর। প্রকৃতপক্ষে সে কিছুই দেখতে পায়নি।

অনুরুপভাবে যে সব মূর্খ এবং কল্পনাবিশ্বাসী মনে করে যে, কোন বিশেষ স্থানে মাটির তলায় সোনা রুপা লুকানো রয়েছে, হীরাজহরত ও মণিমাণিক্য রয়েছে, কিন্তু সেখানে পৌঁছতে পারে না। যেমন বলা হয়ঃ ধন-ভাণ্ডারের মুখে বড় অজগর বসে আছে অথবা তার উপর জিনের পাহারা রয়েছে। এ ধরনের বাজে ও ভিত্তিহীন কাহিনী বর্ণনা করে থাকে। কখনো ধ্যানে বসে, কখনো বা রোগ-ব্যাধির মুক্তির উপায় আছে বলে জানায়। এসব আইয়ামে জাহেলিয়াতের বা প্রাচীন মুসলিম যুগের প্রোখিত কোন ধন সম্পদ ঘটনাক্রমে কেউ পেলে পেতেও পারে, সেখানে দেও, জিন, ভূত প্রেত বা সাপ বিচ্ছু ইত্যাদির আশংকা সম্পূর্ণ অমুলক। এস অপকাহিনী ফন্দিবাজরা প্রচার করে বেড়ায়। আল্লাহ এদের সুবুদ্ধি দান করুন।

ইমাম ইবনে জারীর (কঃ) বলেছেন যে, সম্ভবতঃ এখানে সম্প্রদায় বুঝানো হয়েছে অথবা হয়তো শহর বুঝানো হয়েছে। কিন্তু এটা সঠিক নয়। এখানে তো সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এটা একটা কওমের বর্ণনা। এটা কোন শহরের বর্ণনা নয়। এ কারণেই আদ সম্প্রদায়ের বর্ণনার পরেই সামূদ সম্প্রদায়ের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। সামূদ সম্প্রদায়ের প্রসঙ্গে বলা হয়েছে যে, তারা পাহাড় কেটে কেটে গৃহ নির্মাণ করতোযেমন আল্লাহ বলেনঃ
وَتَنْحِتُونَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوتًا فَارِهِينَ-
অর্থাৎতোমরা পাহাড় কেটে প্রশস্ত ও আরামদায়ক বাসগৃহ নির্মাণ করছে।” (২৬ঃ১৪৯)

ইবনে ইসহাক (রঃ) বলেন যে, সামুদরা ছিল আরবের অধিবাসী। তারা ফুরা নামক স্থানে বসবাস করতোআদদের কাহিনী সূরা আ'রাফে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আর (তুমি কি দেখোনি যে, তোমার প্রতিপালক কি করেছিলেন) কীলক ওয়ালা ফিরাউনের সঙ্গে

এর অর্থ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) কাহিনী বা দল বলে উল্লেখ করেছেন যারা ফিরাউনের কার্যাবলী সুদৃঢ় করতোএমনও বর্ণিত আছে যে, ফিরাউনের ক্রোধের সময় তারা লোকদের হাতে পায়ে পেরেক পুঁতে মেরে ফেলতোউপর থেকে পাথর নিক্ষেপ করে মাথার মগজ বের করে ফেলতো, তারপর মেরে ফেলা হতোকেউ কেউ বলেন যে রশি এবং পেরেক নিয়ে তার সামনে খেলা করা হতোএর একটি কারণ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, তাঁর স্ত্রী (হযরত আছিয়া (রাঃ) মুসলমান হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে পিঠের ভরে শুইয়ে দিয়ে হাতে পায়ে পেরেক মেরে দেয়া হয়েছিল। তারপর পেটের উপর প্রকাণ্ড পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছিল। আল্লাহ তা'আলা ঐ পুণ্যবতী মহিলার প্রতি অনুগ্রহ করুন!
মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যারা দেশে সীমালংঘন করেছিল। অর্থাৎ যারা নগরসমূহে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করার পরে অধিক মাত্রায় উপদ্রব করেছিল। যারা মানুষকে খুবই নিকৃষ্ট মনে করতো এবং নানাভাবে অত্যাচার উৎপীড়ন করতোফলে আল্লাহ তা'আলা তাদের প্রতি শাস্তির বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলেন। তাই আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে নবী (সঃ)! অতঃপর তোমার প্রতিপালক তাদের উপর শাস্তির কষাঘাত হানলেন। অর্থাৎ তাদের প্রতি অবশেষে এমন শাস্তি এসেছে যে, তা টলানো যায়নি। ফলে তারা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস ও নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আল্লাহ তা'আলা অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। নির্ধারিত সময়ে তিনি প্রত্যেককে ভাল মন্দের বিনিময় প্রদান করবেন। সমস্ত মানুষ অবশ্যই তার কাছে ফিরে যাবে এবং সবাই এককভাবে বিচারের জন্য দাঁড়াবে। ঐ সময় আল্লাহ তা'আলা সবারই প্রতি সুবিচার করবেন। তিনি সর্বপ্রকার অত্যাচার হতে মুক্ত ও পবিত্র। এখানে ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ) একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ওটা খুবই গরীব বা দুর্বল হাদীস। ওর সনদের ব্যাপারে বক্তব্য রয়েছে এবং ওর সঠিকতার ক্ষেত্রেও চিন্তাভাবনার অবকাশ রয়েছে। 

ঐ হাদীসটি হযরত মুআয (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাকে বলেনঃহে মুআয (রাঃ)! (জেনে রেখো যে,) মুমিন ব্যক্তি হকের নিকট বন্দী। হে মুআয! পুলসিরাত পার হওয়া পর্যন্ত মুমিন ভয় ও উদ্বেগ হতে নিরাপত্তা লাভ করবে না। হে মুআয (রাঃ)! কুরআন মুমিনকে তার অনেক ইচ্ছা হতে বিরত রাখে, যাতে সে ধ্বংস হতে রক্ষা পেতে পারে। কুরআন তার দলীল, ভয়ভীতি তার হুজ্জত, আল্লাহর প্রতি আকর্ষণ তার বাহন, নামায তার আশ্রয়, রোযা তার ঢাল, সাদকা তার ছাড়পত্র, সততা তার আমীর এবং লজ্জা তার উযীর। এ সবের পরেও তার প্রতিপালক তার সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন। তিনি তাকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছেন।

মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমেরই অন্য একটি বর্ণনা রয়েছে যে, হযরত ইবনে আবদিল কালাঈ (রঃ) তাঁর একভাষণে বলেনঃ হে জনমণ্ডলী! জাহান্নামের সাতটি পুল রয়েছে। প্রত্যেকটির উপর সিরাত বা পথ রয়েছে। প্রথম পুলসিরাতের উপরই মানুষকে আটক করে দেয়া হবে। সেখানে আল্লাহ তা'আলা ফেরেশতাদেরকে বলবেনঃ
(وقفوهم انهم مسءولون) অর্থাৎ তাদেরকে থামাও, কারণ তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে।অতঃপর তাদের কাছে নামাযের হিসাব নেয়া হবে। তারপর যারা মুক্তি পাবার তারা মুক্তি পাবে এবং যারা ধ্বংস হবার তারা ধ্বংস হবে। এরপর যখন তারা দ্বিতীয় পুলসিরাতে পৌছবে তখন তাদের কাছে আমানতের হিসাব নেয়া হবে যে, কিভাবে তা আদায় করেছিল এবং কিভাবে খিয়ানত করেছিল। সুতরাং এখানেও যারা মুক্তি পাওয়ার তারা মুক্তি পাবে এবং যারা ধ্বংস হওয়ার তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। অতঃপর যখন তারা তৃতীয় পুলসিরাতে পৌছবে তখন তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে আত্মীয়তার সম্পর্ক সম্বন্ধে যে, কিভাবে তারা তা মিলিত রেখেছে এবং কিভাবে ছিন্ন করেছে। এখানেও যারা পরিত্রাণ লাভ করার তারা পরিত্রাণ লাভ করবে এবং যারা ধ্বংস হওয়ার তারা ধ্বংস হবে। এই আত্মীয়তা সেই দিন স্বয়ং অবয়ব ধারণ করে বলবেঃহে আল্লাহ! যে আমার সাথে সম্পর্ক মিলিত রেখেছে তার সাথে আপনিও সম্পর্ক মিলিত রাখুন এবং যে আমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে আপনিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুন!” 
আল্লাহ তাআলার এরশাদ করেন (إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ) এর ভাবার্থ এটাই।
--
১৫। মানুষ তো এরূপ যে, তার প্রতিপালক যখন তাকে পরীক্ষা করেন, পরে তাকে সম্মানিত করেন এবং সুখ সম্পদ দান করেন, তখন সে বলেঃ আমার প্রতিপালক আমাকে সম্মানিত করেছেন।
১৬। এবং আবার যখন তাকে পরীক্ষা করেন, তৎপর তার রিযক সংকুচিত করেন, তখন সে বলেঃ আমার প্রতিপালক আমাকে হীন করেছেন।
১৭। না, কখনই নয়। বস্তুতঃ তোমরা পিতৃহীনের সম্মান কর না।
১৮। এবং তোমৰা অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না,
১৯। এবং তোমরা  উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ সম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ করে ফেলে থাকো,
২০। এবং তোমরা ধন সম্পদের অত্যধিক মায়া করে থাকো
--
ভাবার্থ হচ্ছেঃ যে সব লোক সুখ স্বাচ্ছন্দ্য এবং প্রশস্ততা পেয়ে মনে করে যে, আল্লাহ তাআলা তাদের সম্মান করেছেন, তারা ভুল মনে করে। বরং এটা তাদের প্রতি একটা পরীক্ষা বৈ কিছু নয়। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
أَيَحْسَبُونَ أَنَّمَا نُمِدُّهُم بِهِ مِن مَّالٍ وَبَنِينَ
نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرَاتِ بَل لَّا يَشْعُرُونَ
অর্থাৎআমি যে তাদের ধন-মাল ও সন্তান-সন্ততি বৃদ্ধি করছি, এতে কি তারা ধারণা করছে যে, আমি তাদের কল্যাণ সাধন করছি? (না, তা কখনও নয়) বরং তারা বুঝে না।" (২৩ঃ ৫৫-৫৬)
 এটা তাদের জন্যে তাদের প্রতিপালকের দেয়া সম্মান, কল্যাণ ও পুরস্কার নয়। বরং এটা আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে তাদের উপর একটা পরীক্ষা।

আবার যখন তাদেরকে তাদের প্রতিপালক পরীক্ষা করেন এবং তাদের রিক সংকুচিত করে দেন তখন তারা বলেঃ আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে হীন করেছেন। অথচ এসব আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে তাদের উপর পরীক্ষা ছাড়া। কিছুই নয়। এ কারণেই দ্বারা উপরোক্ত উভয় ধারণাকে খণ্ডন করা হয়েছে। এটা প্রকৃত ব্যাপার নয় যে, আল্লাহ যার মাল ধনে প্রশস্ততা দান করেছেন তার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট এবং যার ধন সম্পদ সংকুচিত করে দিয়েছেন তার প্রতি তিনি অসন্তুষ্ট। বরং এই উভয় অবস্থায় স্বীয় চরিত্র ঠিক রেখে কাজ করে যাওয়াই তার সন্তুষ্টি লাভের একমাত্র উপায়। ধনী হয়ে আল্লাহ তা'আলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং দরিদ্র হয়ে ধৈর্য ধারণ করাই বরং আল্লাহর প্রেমিকের পরিচয়। আল্লাহ তা'আলা উভয় প্রকারেই তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষা করে থাকেন।
অতঃপর ইয়াতীমদেরকে সম্মান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন হাদীস শরীফে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃযে ঘরে ইয়াতীম রয়েছে এবং তাকে উত্তমরূপে প্রতিপালন করা হচ্ছে সেই ঘর সবচেয়ে উত্তম ঘর। আর যে ঘরে ইয়াতীম রয়েছে এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে সেই ঘর সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘর।অতঃপর নবী করীম (সঃ) স্বীয় আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃআমি এবং ইয়াতীমের লালন পালনকারী এই ভাবে জান্নাতে অবস্থান করবোসুনানে আবি দাউদে হযরত আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃআমি এবং ইয়াতীমদের লালন পালনকারী এভাবে জান্নাতে থাকবোঐ সময় তিনি তাঁর শাহাদাত ও মধ্যমা অঙ্গুলিকে মিলিত করে ইশারা করলেন।

এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ বরং তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান ও আদর যত্ন কর না এবং অভাব গ্রস্তদেরকে খাদ্যদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না এবং তোমরা উত্তরাধিকারীদের প্রাপ্য সম্পদ সম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ করে থাকো আর তোমরা ধন-দৌলতের প্রতি অতিমাত্রায় ভালবাসা রাখ (কিন্তু এটা মোটেই উচিত নয়)।
--
২১। এটা সঙ্গত নয়। পৃথিবীকে যখন চূর্ণচূর্ণরূপে বিচুৰ্ণিত করা হবে;
২২। এবং যখন তোমার প্রতিপালক আগমন করবেন, আর সারিবদ্ধভাবে ফেরেশতাগণও (সমুপস্থিত হবে);
২৩। সেই দিন নরককে আনয়ন করা হবে এবং সেই দিন মানুষ উপলব্ধি করবেঃ কিন্তু এই উপলব্ধি তার কি কাজে আসবে?
২৪। সে বলবেঃ হায়! আমার এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু অগ্রীম পাঠাতাম। ২৫। সেইদিন তাঁর শাস্তির মত শাস্তি কেউ দিতে পারবে না,
২৬। এবং তাঁর বন্ধনের মত বন্ধন কেউ করতে পারবে না।
২৭। হে প্রশান্ত চিত্ত! :
২৮। তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট ফিরে এসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষজন হয়ে,
২৯। অনন্তর তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও,
৩০। এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।
--
এখানে কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলছেনঃ নিশ্চয়ই সেদিন জমীনকে নিচু করে দেয়া হবে, উচু নিচু জমীন সব সমান করে দেয়া হবে। সমগ্র জমীন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হবে। পাহাড় পবর্তকে মাটির সাথে সমতল করে দেয়া হবে। সকল সৃষ্ট জীব কবর থেকে বেরিয়ে আসবে। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি জগতের বিচারের জন্যে এগিয়ে আসবেন। সকল আদম সন্তানের নেতা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কে সুপারিশের জন্যে অনুরোধ করা হবে। অবশ্য এর পূর্বে সমস্ত মাখলুক বড় বড় নবীদের প্রত্যেকের কাছে গিয়ে সুপারিশের আবেদন জানাবে। কিন্তু তাঁরা নিজেদের অক্ষমতার কথা প্রকাশ করবেন। তারপর তারা মহানবী (সঃ)-এর কাছে এসে সুপারিশের আবেদন জানাবেন। তিনি বলবেনঃ হ্যাঁ, আমি এ জন্যে প্রস্তুত।নবী করীম (সঃ) তখন আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করবেন। তিনি বলবেনঃহে আল্লাহ! আপনি লোকদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্যে আসুন।এটাই প্রথম সুপারিশ। এ আবেদন মাকামে মাহমুদ হতে জানানো হবে। অতঃপর আল্লাহ রাব্বল ইযযত ফায়সালার জন্যে এগিয়ে আসবেন। তিনি কিভাবে আসবেন সেটা তিনিই ভাল জানেন। ফেরেশতারাও তাঁর সামনে কাতারবন্দী হয়ে হাযির হবেন। জাহান্নামকেও নিয়ে আসা হবে।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃসেদিন জাহান্নামের সত্তর হাজার লাগাম থাকবে এবং প্রত্যেক লাগামে সত্তর হাজার ফেরেশতা থাকবে। তারা জাহান্নামকে টেনে নিয়ে আসবে।

সেদিন মানুষ তার নতুন পুরাতন সকল আমল বা কার্যাবলী স্মরণ করতে থাকবে। মন্দ আমলের জন্যে অনুশোচনা করবে, ভালো কাজ না করা বা কম করার কারণে দুঃখ আফসোস করবে। পাপ কর্মের জন্যে লজ্জিত হবে।

হযরত মুহাম্মদ ইবনে উমরাহ (রাঃ) নামক রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর একজন। সাহাবী হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ কোন বান্দা যদি জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত সিজদায় পড়ে থাকে এবং অল্লাহ তা'আলার পূর্ণ আনুগত্যে সারা জীবন কাটিয়ে দেয় তবুও সে কিয়ামতের দিন তার সকল পুণ্যকে তুচ্ছ ও সামান্য মনে করবে। তার একান্ত ইচ্ছা হবে যে, যদি সে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে আরো অনেক পুণ্য সঞ্চয় করতে পারতো
এরপর মহাপ্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ সেইদিন আল্লাহর দেয়া আযাবের মত আযাব আর কেউ দিতে পারবে না। তিনি তার অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে যে ভয়াবহ শাস্তি প্রদান করবেন ঐরূপ শাস্তি দেয়ার ক্ষমতা কারো নেই এবং তার বন্ধনের মত বন্ধনও কেউ করতে পারে না। ফেরেশতারা আল্লাহর অবাধ্য ও অকৃতজ্ঞ বান্দাদেরকে নিকৃষ্ট ধরনের শিকল এবং বেড়ী পরিধান করাবেন।

পাপী ও অন্যায়কারীদের পরিণাম বর্ণনা করার পর আল্লাহ তা'আলা এখন পুণ্যবানদের অবস্থা ও পরিণাম বর্ণনা করছেন। যে সব রূহ তৃপ্ত, শান্ত, পাক পবিত্র এবং সত্যের সহচর, মৃত্যুর সময়ে এবং কবর হতে উঠার সময় তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে, তার পুণ্য ও পারিশ্রমিকের কাছে, জান্নাত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির কাছে ফিরে চলল। এই রূহ আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং আল্লাহও এর প্রতি সন্তুষ্ট। এই রূহকে এতো দেয়া হবে যে, সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবে। তাকে বলা হবেঃ তুমি আমার বিশিষ্ট বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন যে, এ আয়াত হযরত উসমান ইবনে আফফান (রাঃ)-এর শানে নাযিল হয়। হযরত বুরাইদাহ্ ইবনে হাসীব (রঃ) বলেন যে, এ আয়াত হযরত হামযাহ্ ইবনে আবদিল মুত্তালিব (রাঃ)-এর শানে অবতীর্ণ হয়। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, কিয়ামতের দিন প্রশান্ত চিত্ত আত্মাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা তোমাদের সাথী অর্থাৎ দেহের নিকট ফিরে যাও যে দেহ পৃথিবীতে তোমরা ধারণ করেছিলে। তোমরা একে অন্যের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে যাও।

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে এটাও বর্ণিত আছে যে, তিনি (فَادْخُلِي فِي عِبَادِي- وَادْخُلِي جَنَّتِي) , এই ভাবে পাঠ করতেন। অর্থাৎহে প্রশান্ত চিত্ত রুহ্! তুমি আমার বান্দার মধ্যে অর্থাৎ তার দেহে চলে যাও।ইকরামা (রাঃ) এবং সাকাবী (রঃ)-ও এ কথাই বলেছেন। ইমাম ইবনে জারীর (রঃ)-ও এটাই পছন্দ করেছেন। কিন্তু এ উক্তিটি গারীব বা দুর্বল। প্রথম উক্তিটিই প্রকাশমান। যেহেতু আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ
ثُمَّ رُدُّواْ إِلَى اللّهِ مَوْلاَهُمُ الْحَقِّ
অথাৎঅতঃপর সকলকেই তাদের প্রকৃত প্রতিপালকের নিকট ফিরিয়ে নেয়া হবে।” (৬ঃ ৬২) আর এক জায়গায় আছেঃ
وَأَنَّ مَرَدَّنَا إِلَى اللَّهِ
অর্থাৎআমাদের প্রত্যাবর্তন আল্লাহ্র নিকট।” (৪০ঃ ৪৩) অর্থাৎ তাঁর আদেশের প্রতি এবং তাঁরই সামনে।

মুসনাদে ইবনে আবী হাতিমে হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, যখন ...... يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُএ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন হযরত আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি তখন বলে ওঠেনঃহে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! কি সুন্দর বাণী এটা।তখন রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) তাঁকে বলেনঃ “(হে আবু বকর (রাঃ)!) তোমাকেও এ কথাই বলা হবে।অন্য এক রিওয়াইয়াতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ)-এর সামনে হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রাঃ) এ আয়াত পাঠ করেছিলেন। তখন হযরত আবুবকর (রাঃ) বলেছিলেন!কী চমকার বাণী!তখন নবী করীম (সঃ) তাঁকে বলেছিলেন, “হে আবূবকর (রাঃ)!) তোমাকে তোমার মৃত্যুর সময় ফেরেশতা এ কথাই বলবেন।

হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) তায়েফে মৃত্যুবরণ করেন। ঐ সময় এমন এক পাখি এলো যা ইতিপূর্বে কখনো দেখা যায় নাই। পাখিটি এসে তাঁর মৃতদেহের মধ্যে প্রবেশ করলোএর পরে পাখিটিকে আর বের হতে দেখা যায় নাই। তাঁকে দাফন করা হলে তাঁর কবরের এক কোণ হতে يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ  এ আয়াতগুলির তিলাওয়াত শোনা গেল। কিন্তু কে তিলাওয়াত করেছেন তা জানা যায় নি।

আবৃহাশিম (রঃ) বলেন ঃ রোম যুদ্ধে আমরা রোম রাজ্যে বন্দি হই। রোমক সম্রাট আমাদেরকে তার সামনে হাযির করে বলেঃতোমরা তোমাদের ধর্মমত পরিত্যাগ কর অথবা মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হয়ে যাও।তারপর একে একে প্রত্যেককে বলা হলোঃতোমরা নিজ ধর্ম ত্যাগ করে আমাদের ধর্ম গ্রহণ কর, অন্যথায় আমি জল্লাদকে আদেশ দিচ্ছি, সে এক্ষুণি তোমাদের দেহ দ্বিখন্ডিত করে দিবে।তিন জন মুসলমান ধর্ম ত্যাগ করে মুরতাদ হয়ে যায়, কিন্তু চতুর্থ ব্যক্তি স্বধর্ম ত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁর দেহ হতে মস্তক বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। তারপর ঐ মস্তক এক পুকুরে ফেলে দেয়া হয়। মস্তক পানিতে ডুবে গেলকিন্তু পরক্ষণেই ভেসে উঠে ধর্মত্যাগকারী তিন ব্যক্তির প্রতি তাকিয়ে তাদের নাম ধরে ধরে ডেকে বললোঃ শোনো, আল্লাহ্ তাআ'লা বলেছেনঃ
يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ - ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً - فَادْخُلِي فِي عِبَادِي - وَادْخُلِي جَنَّتِي

--
২৭। হে প্রশান্ত চিত্ত! :
২৮। তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট ফিরে এসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষজন হয়ে,
২৯। অনন্তর তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও,
৩০। এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।
--
এতোটুকু বলার পরেই ঐ ছিন্ন মস্তক পুনরায় পানিতে ডুবে গেল। স্বয়ং বাদশাহ্ এবং তার সভাষদবর্গ এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করলোখ্রিষ্টানদের উপর এ ঘটনাটি এতো প্রভাব বিস্তার করলো যে, তারা তখনই মুসলমান হয়ে যেতে চাচ্ছিল। এ অবস্থা দেখে বাদশাহ্ দরবারের সমাপ্তি ঘোষণা করলোধর্মত্যাগকারী ঐ তিন ব্যক্তি পুনরায় স্বধর্মে ফিরে আসলোআমরা সবাই তখন থেকে বন্দী জীবন যাপন করছিলাম। অবশেষে খলিফা আকূজা'ফর মনসূরের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে মুক্তিপণ প্রেরণ করা হয়। ফলে আমরা মুক্তি লাভ করি ।
হযরত আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ (সঃ) একটি লোককে নিম্নের দুআ'টি পাঠ করতে বলেনঃ
اللهم انى اسئلك نفسا بك مطمئنة تؤمن بلقائك وترضى بقضائك وتقنع
অর্থাৎহে আল্লাহ্! আমি আপনার নিকট এমন নফ্স চাচ্ছি যা আপনার সত্তার প্রতি পরিতৃপ্ত থাকে, আপনার সাথে সাক্ষাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, আপনার ফায়সালায় সন্তুষ্ট থাকে এবং আপনার দানে তুষ্ট থাকে।
--
(সূরাঃ ফাজর এর তাফসীর সমাপ্ত)
--
টীকাঃ
. এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবী হাতি (ঃ) বর্ণনা করেছেন।
. এটাও ফুলে ইবনে আবী হাতিয়ে বর্ণিত হয়েছে।
. এ হাদীসটি দুজন বর্ণনাকারী ইউনুস হিযা, ও আবু হামযাহ অজ্ঞাত । এটা মুরসাল হাদীস। সম্ভবতঃ এটা আবু হামযাহর উক্তি হবে।
. এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। অনুরূপভাবে এটা ইমাম তিরমিযীও (রঃ) আবদুল্লাহ ইবনে আবদির রহমান দারিমী (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন।
. এটা ইমাম ইবনু আবী হাতিম (রঃ) ও ইমাম তিবরানী (রঃ) বর্ণনা করেছেন।
. এ হাদীসটি হাফিয ইবনু আসাকির (রঃ) বর্ণনা করেছেন।

No comments:

Post a Comment